বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আওয়ামী লীগ মিথ্যা ও অসত্য বিবৃতির উপর বেশি চর্চা করছে। মিথ্যা প্রচারে এরা অক্লান্ত ও বিরামহীন। তিনি বলেন, বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের গুম, খুন ও হত্যার পরেও সরকার সন্তুষ্ট না হয়ে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে কলঙ্কলেপন করে বিএনপি নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে গ্রেফতার করছে।
সোমবার দুপুরে রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম প্রমুখ।
রিজভী বলেন, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি হাসান মামুনকে গত শনিবার রাতে র্যাব বাসা থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে অদৃশ্য করে রাখে এবং ২০ ঘণ্টা পর রোববার পটুয়াখালী সদর থানায় হস্তান্তর করে। হাসান মামুনকে তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনাটি সম্পূর্ণভাবে নাটকীয় ও ভীতি সৃষ্টির লক্ষ্য নিয়েই করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী মধ্যরাতের নির্বাচন সরকারকে উপহার দিয়ে এখন পরবর্তী এজেন্ডা বিরোধীদলকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য নতুন ষড়যন্ত্রতত্ত্ব রচনা করছে।
বিএনপির সিনিয়র মহাসচিব বলেন, মধ্যরাতের নির্বাচনের পরেও সরকারের ভেতর থেকে শঙ্কা দূরীভূত হচ্ছে না। সুষ্ঠু ও সর্বজনমান্য নির্বাচনকে পাথরচাপা দেয়ার পরেও তারা নিজেদেরকে নিরাপদ মনে করছে না। তাই ডিজিটাল বাংলাদেশের নামে ডিজিটাল দুর্বৃত্তপনার কোন শেষ নেই।
তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী পরিত্যক্ত ইভিএম (ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন) পদ্ধতিকে নিয়ে মহাপরিকল্পনার অংশ হিসেবে সরকার এটি নিয়ে আবারও ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। তার প্রমাণ বগুড়ায় আসন্ন নির্বাচনে প্রতিটি কেন্দ্রে ইভিএম ব্যবহার করা হবে। ভোটার’রা এই ইভিএম প্রক্রিয়ার জটিলতায় বেশী ভোট দিতে সক্ষম হয় না।
রিজভী বলেন, ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ না থাকলে ইভিএম প্রক্রিয়ায় আরও বেশী জালিয়াতি করা সম্ভব। এর আগে ভোটারের বদলে প্রিজাইডিং অফিসার ইভিএম মেশিনের বোতাম চেপে ভোট চুরি করেছে। ইভিএম-এর কোন পেপার ট্রেইল না থাকায় ভোট দেয়া-না দেয়ার কোন প্রমান থাকে না। ভারতের অনেক জায়গায় ইভিএম-এ ভোটগ্রহণ হলেও সেখানে সকল বিরোধী দল এটির তীব্র প্রতিবাদ করেছে, হাইকোর্টে মামলাও আছে। যদিও সেদেশের ইভিএম-এ পেপার ট্রেইল ছিল। বাংলাদেশে ইভিএম পদ্ধতি ব্যবহারের মূল উদ্দেশ্য হলো-এই ইভিএম মেশিন দ্বারা ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে দূরবর্তী স্থান থেকেও ভোট ডাকাতি করা সম্ভব। ইভিএম পদ্ধতির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে তা প্রত্যাহারের জোর দাবি জানান তিনি।